যুবকদেরকে ই*সলা*মের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য জুমায় নিমোক্ত আলোচনা পেশ করতে পারেন। - Proteva prokash

Proteva prokash,bangla news, current News, bangla newspaper, bangladesh newspaper, online paper, bangladeshi newspaper, bangla news paper, bangladesh newspapers, newspaper, all bangla news paper, bd news paper, news paper, bangladesh news paper, daily, bangla newspaper, daily news paper, bangladeshi news paper, bangla paper, all bangla newspaper, bangladesh news, daily newspaper.

Wednesday, August 21, 2024

যুবকদেরকে ই*সলা*মের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য জুমায় নিমোক্ত আলোচনা পেশ করতে পারেন।

 সুযোগের সদ্ব্যবহার। 



গৌরবময় ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে মৌলিকভাবে নয়টি (৯) বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। 


সম্মানিত খ*তী*ব সাহেবগণ! 

যুবকদেরকে ই*সলা*মের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য জুমায় নিমোক্ত আলোচনা পেশ করতে পারেন। 


হে মুসলিম তরুণ! 

আপনাদের পরিবর্তনে পরিবার,সমাজ,দেশ পরিবর্তন হয়ে যাবে, আপনারাই পারেন অন্যদের জন্য আদর্শ যুবক হতে। 


আপাতত মৌলিকভাবে নয়টি পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুনভাবে আবার নিজেদের জীবন শুরু করতে হবে। 


এক. 

ইসলামে পরিপূর্ণ ফিরে আসতে হবে, ইসলাম থেকে দূরে সরে যাওয়া আমাদের অধপতনের প্রধান কারণ : তাই পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করতে হবে। 


یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا ادۡخُلُوۡا فِی السِّلۡمِ کَآفَّۃً ۪ وَ لَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّہٗ لَکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ 

হে মুমিনগণ, তোমরা ইসলামে পূর্ণরূপে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না । নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য স্পষ্ট শত্রু।

বাকারা-২০৮


দুই. 

আল্লাহর দ্বীনের সহযোগী হওয়া:


আল্লাহ তাআলার কিছু অলঙ্ঘনীয় অপরিবর্তনীয় মূলনীতি রয়েছে। আল্লাহ তাআলার একটা মূলনীতি হলো,যদি আমরা তার দ্বীনের সহযোগী হই, তাহলে তিনি আমাদের কে সাহায্য করবেন। 


یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تَنۡصُرُوا اللّٰہَ یَنۡصُرۡکُمۡ وَ یُثَبِّتۡ اَقۡدَامَکُمۡ 

হে মুমিনগণ, যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর তবে আল্লাহও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা সুদৃঢ় করে দেবেন।

(সুরা : মুহাম্মদ, আয়াত : ৭)


অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, 

اُذِنَ لِلَّذِیۡنَ یُقٰتَلُوۡنَ بِاَنَّہُمۡ ظُلِمُوۡا ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ عَلٰی نَصۡرِہِمۡ لَقَدِیۡرُۨ  

যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে, যাদেরকে আক্রমণ করা হচ্ছে। কারণ তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে বিজয় দানে সক্ষম।

হজ্জ-৩৯


الَّذِیۡنَ اُخۡرِجُوۡا مِنۡ دِیَارِہِمۡ بِغَیۡرِ حَقٍّ اِلَّاۤ اَنۡ یَّقُوۡلُوۡا رَبُّنَا اللّٰہُ ؕ وَ لَوۡ لَا دَفۡعُ اللّٰہِ النَّاسَ بَعۡضَہُمۡ بِبَعۡضٍ لَّہُدِّمَتۡ صَوَامِعُ وَ بِیَعٌ وَّ صَلَوٰتٌ وَّ مَسٰجِدُ یُذۡکَرُ فِیۡہَا اسۡمُ اللّٰہِ کَثِیۡرًا ؕ وَ لَیَنۡصُرَنَّ اللّٰہُ مَنۡ یَّنۡصُرُہٗ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَقَوِیٌّ عَزِیۡزٌ 

যাদেরকে তাদের নিজ বাড়ী-ঘর থেকে অন্যায়ভাবে শুধু এ কারণে বের করে দেয়া হয়েছে যে, তারা বলে, ‘আমাদের রব আল্লাহ’। আর আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা দমন না করতেন, তবে বিধস্ত হয়ে যেত খৃস্টান সন্ন্যাসীদের আশ্রম, গির্জা, ইয়াহূদীদের উপাসনালয় ও মসজিদসমূহ- যেখানে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়। আর আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করেন, যে তাকে সাহায্য করে। নিশ্চয় আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী।

হজ্জ-৪০


তিন. 

ভ্রাতৃপ্রেম বাড়াতে হবে, ভ্রাতৃপ্রেমের অভাব আমাদের অধপতনের অন্যতম কারণ, তাই ভ্রাতৃত্বের বন্ধন মজবুত করতে হবে। 

সম্পর্কটা ভ্রতৃত্বের হোক, 


উদাহরণ-১

মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই। 


আল্লাহ তাআলা বলেন, 

                                                  اِنَّمَا الۡمُؤۡمِنُوۡنَ اِخۡوَۃٌ 

নিশ্চয় মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই।

হুজুরত আয়াত-১০


উদাহরণ-২

বিদায় হজ্জ্বে নবিজীর ঐতিহাসিক ভাষনে স্পষ্ট ঘোষণা। 


                                                           يا أيها الناس

হে লোকসকল! 

                                                          اسمعوا قولي

তোমরা আমার কথা শোন, 

                                                               واعقلوه

এবং বুঝো


                                  تعلمن أن كل مسلم أخ للمسلم

জেনে রাখো! প্রত্যেক মুসলিম প্রত্যেক মুসলমানের ভাই, 

                                        وأن المسلمين إخوةٌ

আর মুসলিমগন ভাই (তাদের সম্পর্কটা ভ্রাতৃত্বের) 

 فلا يحل لامرئ من أخيه إلا ما أعطاه عن طيب نفس منه، 

সুতরাং কোন মানুষের জন্য তার ভাইয়ের সম্পদ বৈধ নয় যতক্ষণ না সে সন্তুষ্টচিত্তে না দেয়, 

                                        فلا تظلمن أنفسكم

তোমরা নিজেদের উপর জুলুম করোনা। 

(কারণ তোমরা তো ভাই) 

ইবনে হিসাম ২/৬০৩


উদাহরণ-৩

নবিজী আমাদের কে ভাই ভাই হয়ে থাকতে বলেছেন, 


 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ لاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَنَاجَشُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا

‏আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর হিংসা করো না, পরস্পর ধোঁকাবাজি করো না, পরস্পর বিদ্বেষ পোষণ করো না, একে অপরের ক্ষতি করার উদ্দেশে আগোচরে শত্রুতা করো না এবং একে অন্যের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয়ের চেষ্টা করবে না। তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে থাকো। 


‏ الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ وَلاَ يَحْقِرُهُ ‏

‏ التَّقْوَى هَا هُنَا ‏ وَيُشِيرُ إِلَى صَدْرِهِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ‏

‏ بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ ‏

এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে তার উপর অত্যাচার করবে না, তাকে অপদস্ত করবে না এবং হেয় প্রতিপন্ন করবে না। তাক্‌ওয়া এখানে, এ কথা বলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনবার তাঁর বক্ষের প্রতি ইঙ্গিত করলেন। একজন মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার ভাইকে হেয় জ্ঞান করে। কোন মুসলিমের উপর প্রত্যেক মুসলিমের জান-মাল ও ইয্‌যত-আবরু হারাম। 


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৪৩৫

                                      كِتَابٌ : الْبِرُّ وَالصِّلَةُ وَالْآدَابُ 

                                      بَابٌ : تَحْرِيمُ ظُلْمِ الْمُسْلِمِ


উদাহরণ-৪

আনসার ও মুহাজিরদের মাঝে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক করে দিতেন। 

 عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَدِمَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ الْمَدِيْنَةَ فَآخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُ وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيْعِ الأَنْصَارِيِّ فَعَرَضَ عَلَيْهِ أَنْ يُنَاصِفَهُ أَهْلَهُ وَمَالَهُ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بَارَكَ اللهُ لَكَ فِيْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ دُلَّنِيْ عَلَى السُّوقِ 


আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইব্‌নু ‘আউফ (রাঃ) যখন মদীনায় আসলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ও সা’দ ইব্‌নু রাবী’ আনসারী (রাঃ) - এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন জুড়ে দিলেন। সা’দ (রাঃ) তার সম্পদ ভাগ করে অর্ধেক সম্পদ এবং দু’জন স্ত্রীর যে কোন একজন নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘আবদুর রহমানকে অনুরোধ করলেন। তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহ্‌ আপনার পরিবারবর্গ ও ধন-সম্পদে বরকত দান করুন। আমাকে এখানকার বাজারের রাস্তাটি দেখিয়ে দিন।


فَرَبِحَ شَيْئًا مِنْ أَقِطٍ وَسَمْنٍ فَرَآهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ أَيَّامٍ وَعَلَيْهِ وَضَرٌ مِنْ صُفْرَةٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَهْيَمْ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنْ الأَنْصَارِ قَالَ فَمَا سُقْتَ فِيْهَا فَقَالَ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ


 তিনি মুনাফা হিসেবে কিছু ঘি ও পনির লাভ করলেন। কিছুদিন পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে তার দেখা হল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তার গায়ে ও কাপড়ে হলুদ রং-এর চিহ্ন দেখতে পেয়ে বললেন, হে আবদুর রাহমান, ব্যাপার কি! তিনি বললেন, আমি একজন আনসারী মহিলাকে বিয়ে করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তাকে কি পরিমাণ মোহর দিয়েছ? তিনি বললেন, তাকে খেজুর বিচির পরিমাণ সোনা দিয়েছি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, একটি বকরি দিয়ে হলেও ওয়ালীমাহ করে নাও। 


সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৯৩৭

                                    كِتَابٌ : مَنَاقِبُ الْأَنْصَارِ

                               بَابٌ : كَيْفَ آخَى النَّبِيُّ بَيْنَ أَصْحَابِهِ


উদাহরণ-৫

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্পেশালি আমাদের কে ভাই বলেছেন, 

 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَتَى الْمَقْبُرَةَ فَقَالَ ‏ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ وَدِدْتُ أَنَّا قَدْ رَأَيْنَا إِخْوَانَنَا


আবূ হুরাইরাহ্(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

একবার রসূলুল্লাহ্‌(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি কবরস্থানে এসে বললেন, তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। হে কবরবাসী মু’মিনগণ! ইন্‌শাআল্লাহ আমরাও তোমাদের সাথে এসে মিলব। আমার বড় ইচ্ছা হয় যে আমাদের ভাইদেরকে দেখি। 

 ‏

"‏ ‏ قَالُوا أَوَلَسْنَا إِخْوَانَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ أَنْتُمْ أَصْحَابِي وَإِخْوَانُنَا الَّذِينَ لَمْ يَأْتُوا بَعْدُ ‏فَقَالُوا كَيْفَ تَعْرِفُ مَنْ لَمْ يَأْتِ بَعْدُ مِنْ أُمَّتِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ 


সহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমরা কি আপনার ভাই নই? তিনি বললেন, তোমরা তো আমার সহাবা। আর যারা এখনো (পৃথিবীতে) আসেনি তারা আমাদের ভাই। সহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনার উম্মাতের মধ্যে যারা এখনো (পৃথিবীতে) আসেনি তাদেরকে আপনি কিভাবে চিনবেন?


فَقَالَ ‏"‏ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ رَجُلاً لَهُ خَيْلٌ غُرٌّ مُحَجَّلَةٌ بَيْنَ ظَهْرَىْ خَيْلٍ دُهْمٍ بُهْمٍ أَلاَ يَعْرِفُ خَيْلَهُ ‏ ‏ قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏


তিনি বললেন, “কেন, যদি কোন ব্যক্তি সাদা রঙের কপাল ও সাদা রঙের হাত-পা বিশিষ্ট ঘোড়া অনেকগুলো কালো ঘোড়ার মধ্যে মিশে যায় তবে সে কি তার ঘোড়াকে চিনে নিতে পারবে না? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ, ইয়া রসূলাল্লাহ!


قَالَ ‏"‏ فَإِنَّهُمْ يَأْتُونَ غُرًّا مُحَجَّلِينَ مِنَ الْوُضُوءِ وَأَنَا فَرَطُهُمْ عَلَى الْحَوْضِ أَلاَ لَيُذَادَنَّ رِجَالٌ عَنْ حَوْضِي كَمَا يُذَادُ الْبَعِيرُ الضَّالُّ أُنَادِيهِمْ أَلاَ هَلُمَّ ‏.‏ فَيُقَالُ إِنَّهُمْ قَدْ بَدَّلُوا بَعْدَكَ ‏.‏ فَأَقُولُ سُحْقًا سُحْقًا ‏


তিনি বললেন, তাঁরা (আমার উম্মাত) সেদিন এমন অবস্থা আসবে যে, ওযূর ফলে তাদের মুখমন্ডল, হাত-পা জ্যোতির্ময় হবে। আর হাওযের পাড়ে আমি হব তাদের অগ্রনায়ক। জেনে রাখ, কিছু সংখ্যক লোককে সেদিন আমার হাওয থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে যেমনিভাবে বেওয়ারিশ উটকে তাড়িয়ে দেয়া হবে। আমি তাদেরকে ডাকব, এসো এসো। তখন বলা হবে, “এরা আপনার পরে (আপনার দীনকে) পরিবর্তন করে দিয়েছিল”। 

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৭২

                                     كِتَابٌ : الطَّهَارَةُ  

           بَابٌ : اسْتِحْبَابُ إِطَالَةِ الْغُرَّةِ وَالتَّحْجِيلِ فِي الْوُضُوءِ


উদাহরণ-৬

কঠিন মুহুর্তে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের কে ভাই বলে সম্বোধন করেছেন। 


، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي جِنَازَةٍ فَجَلَسَ عَلَى شَفِيرِ الْقَبْرِ فَبَكَى حَتَّى بَلَّ الثَّرَى

ثُمَّ قَالَ ‏ يَا إِخْوَانِي لِمِثْلِ هَذَا فَأَعِدُّوا ‏

বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে এক জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। তিনি কবরের কিনারে বসে কাঁদলেন, এমনকি তাঁর চোখের পানিতে মাটি ভিজে গেলো। অতঃপর তিনি বলেনঃ “হে ভাইসব! তোমাদের অবস্থাও তার মতই হবে, সুতরাং তোমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করো”।

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৪১৯৫

                                كِتَابُ الزُّهْدِ | بَابٌ : الْحُزْنُ وَالْبُكَاءُ


উদাহরণ-৭

পরিপূর্ণ মুমিন হওয়ার বৈশিষ্ট্য। 


عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏. قَالَ ‏ لا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ

তোমাদের কেউ ততক্ষণ (প্রকৃত) মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার (মুসলিম) ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করবে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।

(বুখারি, হাদিস : ১৩ মুসলিম, হাদিস : ৭৫)


চার. 

পরস্পরের মধ্যে আন্তরিকতা বাড়িয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত কমাতে হবে, এক্ষেত্রে দায়িত্বশীলদের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। 


وَ اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ وَ لَا تَنَازَعُوۡا فَتَفۡشَلُوۡا وَ تَذۡہَبَ رِیۡحُکُمۡ وَ اصۡبِرُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰہَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ 

আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং পরস্পর ঝগড়া করো না, তাহলে তোমরা সাহসহারা হয়ে যাবে এবং তোমাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য ধর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।

(সুরা : আনফাল, আয়াত : ৪৬)


পাচ. 

বিলাসিতা ও দুনিয়ায় মজে যাওয়া যাবেনা, 


عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لَوْ كَانَتِ الدُّنْيَا تَعْدِلُ عِنْدَ اللَّهِ جَنَاحَ بَعُوضَةٍ مَا سَقَى كَافِرًا مِنْهَا شَرْبَةَ مَاءٍ ‏"‏

দুনিয়ার মূল্য যদি আল্লাহর কাছে মাছির একটি পাখার সমমূল্য হতো, তাহলে তিনি কোনো কাফিরকে এক ঢোকও পানি পান করতে দিতেন না।

(তিরমিজি, হাদিস : ২৩২০)


ছয়. 

অধিকার আদায়ের লড়াই বর্জন করা যাবেনা: 


মুসলমানদের জন্য জিহাদ ছেড়ে তথাকথিত শান্তির পথ বেছে নেওয়ার কোনোই সুযোগ নেই। আল্লাহ তাআলা বলেন, 


اِلَّا تَنۡفِرُوۡا یُعَذِّبۡکُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمًا ۬ۙ وَّ یَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَیۡرَکُمۡ وَ لَا تَضُرُّوۡہُ شَیۡئًا ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ 

‘যদি তোমরা (যুদ্ধে) বের না হও, তবে তিনি তোমাদের বেদনাদায়ক শাস্তি দেবেন এবং তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক জাতিকে আনয়ন করবেন। আর তোমরা তাঁর কিছুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।

(সুরা : তাওবা, আয়াত : ৩৯)


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

مَن مات ولم يَغزُ ، ولم يحدِّث به نفسَه ، مات علَى شُعبةٍ من نفاقٍ

যদি কেউ এমতাবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যে, সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে নি এবং যুদ্ধাভিযানে অংশগ্রহণের কোনো কথাও নিজের মনকে কখনো বলে নি, তবে সে ব্যক্তি মুনাফিকীর একটি শাখার উপর মৃত্যুবরণ করল।

মুসলিম ৩/১৫১৭


জিহাদের চেতনা প্রতিটি মুমিনের হৃদয়ে থাকতেই হবে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 


عَلَيْكُمْ بِالْجِهَادِ فِي سَبِيلِ اللهِ فَإِنَّهُ بَابٌ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ يُذْهِبُ اللهُ بِهِ الْهَمَّ وَالْغَمَّ

‘তোমাদের কর্তব্য হ’ল তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। কেননা জান্নাতের দরজাসমূহের অন্যতম দরজা হ’ল জিহাদ। আল্লাহ এর মাধ্যমে যাবতীয় উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা দূরীভূত করে দেন’

আহমাদ হা/২২৭১৯


জিহাদ ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া। এটি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যে ইবাদতকে শয়তান সবচেয়ে বেশী ভয় পায়। চূড়া বা ছাদ না থাকলে যেমন কোন ঘরে আশ্রয় নেওয়া যায় না। তেমনি জিহাদ বিহীন ইসলামের মাধ্যমেও সফলতার আশা করা যায় না।


সাত. 

যোগ্য ও আদর্শবান নেতৃত্বের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা, যাকে তাকে নেতৃত্বে বসানো যাবেনা, কেননা

আল্লাহ তাআলার একটি নিয়ম হলো, মুনাফিক ও ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদের হাতে উম্মাহর বিজয় আসে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, 


                         اِنَّ اللّٰہَ لَا یُصۡلِحُ عَمَلَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ 

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদের কাজ সার্থক করেন না।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৮১)


যোগ্য নেতার মৌলিক কাজ হবে চারটি, 


اَلَّذِیۡنَ اِنۡ مَّکَّنّٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّکٰوۃَ وَ اَمَرُوۡا بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ نَہَوۡا عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ لِلّٰہِ عَاقِبَۃُ الۡاُمُوۡرِ 

তারা এমন যাদেরকে আমি যমীনে ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে; আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহরই অধিকারে।

হজ্জ-৪১


আট. 

শত্রুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা যাবেনা: 


یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوا الۡیَہُوۡدَ وَ النَّصٰرٰۤی اَوۡلِیَآءَ ۘؔ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ؕ وَ مَنۡ یَّتَوَلَّہُمۡ مِّنۡکُمۡ فَاِنَّہٗ مِنۡہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ 


হে মুমিনরা, তোমরা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ কোরো না। তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে কেউ তাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে নিশ্চয়ই তাদেরই একজন। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিম সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৫১)


নয়. 

যথাযথ শুরাব্যবস্থার পদ্ধতি থাকতে হবে :

শাসন পরিচালনার অন্যতম মানদণ্ড শুরা পরিষদ।শাসন ক্ষমতায় যাওয়ার পূর্বেই শুরাব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব বাড়াতে হবে, শুরাব্যবস্থা ছাড়া একনায়কতন্ত্র কায়েম করা ইসলামী শরিয়তবিরোধী। আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসুল (সা.)-কে নির্দেশ দিয়ে বলেন, 


 وَ شَاوِرۡہُمۡ فِی الۡاَمۡرِ ۚ فَاِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَوَکِّلِیۡنَ 

 আর কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরার্মশ কর। অতঃপর যখন সংকল্প করবে তখন আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করবে। নিশ্চয় আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদেরকে ভালবাসেন। 

 

(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৯)

No comments:

Post a Comment