শাপলার সেই দিনগুলো-১
লিখেছেন তানজিম আরিফিন আদনান ভাই।
মাতুয়াইল ডাম্পিং গ্রাউন্ড, স্থানীয় ভাষায় বলে ময়লার পাহাড়। ঢাকা-শহরের সমস্ত আবর্জনা এখানে এনে ক্রাশিং করে গ্যাস বানানো হয়। এরিয়াটা কয়েক মাইল ব্যাপী হবে। ডেমরা কোনাপাড়ার মধ্যে পড়েছে জায়গাটা।
২০১৩ সাল, আমি তখন কাজলা ভাঙাপ্রেস কাসেমিয়া মাদরাসায় পড়ি। ৫ই মে রাতে শাপলা চত্বরে স্বশরীরে উপস্থিত ছিলাম। চোখের সামনে শহীদ হতে দেখেছি। লাশের ওপর দিয়ে ফিরেছি ভোররাতে।
পরদিন সকাল, মাদরাসা থেকে আধা কিলো দূরত্বেই সেই ময়লার পাহাড়। এর আশেপাশে খেলতে যেতাম আমরা। ঘোরার অন্যতম জায়গা ছিল এই জায়গা। ভোরে যখন মাদরাসায় ফিরলাম, জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম একের পর এক ময়লার ট্রাক ঢুকছে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। মিনিমাম ১৫/২০টা হবে যদ্দূর মনে পড়ছে। তবে সবগুলোর ওপরে ত্রেপাল দিয়ে ঢাকা, যা আগে কখনো দেখিনি। পেছনে দেখলাম পুলিশ-র্যাবের গাড়ি। বিকালে হাঁটতে গেলাম সেখানে। কিন্তু মেইন গেইটের সামনে পুলিশের গাড়ি, আর স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাদের উপস্থিতি দেখলাম। এমনিতেই আগের রাতে পুলিশের নির্মমতা দেখে মনে ঘৃণা আর ভয় জন্মেছে, এর ওপর পুলিশ দূর থেকেই সরিয়ে দিচ্ছে। আঁচ করতে পারছিলাম, ভেতরে কিছু একটা হচ্ছে। যেই গেইট এত বছরেও বন্ধ দেখলাম না, সেটা আজ বন্ধ কেন?
ও কয়েকদিন পর যখন সেখানে আবারও গেলাম, ভেতরে সেখানকার পরিচিত কর্মচারীদের মুখে স্পষ্ট শুনলাম, গাড়ি ভরতি লাশ এনে ট্রিটমেন্ট প্লান্টে সব গুড়ো গুড়ো করে মিশিয়ে দেয়া হয় ময়লার সাথে। যেখানে ফেলা হয় গুড়োগুলো, সেই জায়গাটা ঘেরাও করা ছিল, প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। আরও কিছু তথ্য শুনেছি, শুনেছি অনেককিছুই।
দূর থেকেই তখন পেলাম শহীদের ঘ্রাণ, যেন বহুদিন ধরে চিনি এসব ঘ্রাণ, দুর্গন্ধময় এই জায়গায় এই ঘ্রাণ আসবে কোত্থেকে!
বলব আরও কিছু, লিখব এসব চেপে রাখা ইতিহাস, সবে তো শুরু!
#শাপলার_সেই_দিনগুলো
No comments:
Post a Comment